Birth

দমবন্ধ করা মূহুর্ত | Breathtaking

দমবন্ধ করা মূহুর্ত
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়

কানসবহালের ঘটনা।

একটা শনিবার বিকেলে অফিস থেকে ফিরে কোয়াটারের বারান্দায় বসে ছুটি র আমেজটা উপভোগ করছি। সামনের গাছপালা দূরের মাঠ, তার চেয়েও দূরের ট্রেনলাইন দিয়ে ঝমাঝম শব্দে ট্রেন চলে যাওয়ার শব্দ কানে আসছে।
কাল রবিবার। এটাই একটা খুশি।
আমরা তো এই ছোট ছোট আনন্দ নিয়ে বেঁচে থাকতে, ভালো থাকতে চাই।
কিন্তু বিধিবাম।
হঠাৎ ভেতর থেকে বৌ এর চিৎকার।
কি ব্যাপার!! হৃদপিন্ড বগলে নিয়ে দৌড়।
আমার ছোট ছেলে তখন দেড় দুই বছর বয়স।
খাবার গলায় কিম্বা নাকে আটকে গেছে। নিঃশ্বাস নিতে পারছে না। সে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।
ঘড়িতে বিকেল সাড়ে পাঁচটা। সাথে সাথেই স্কুটার বার করে বউ কে পেছনে নিয়ে হেল্থসেন্টারে দৌড়।
ওখানে রাস্তা ভালো কিন্তু যথেষ্ট ই উঁচু নীচু। আমি খুব দক্ষ চালক নয়। অথচ বৌ পেছন থেকে বলছে “ছেলের মুখ দিয়ে লালা গড়াচ্ছে, এলিয়ে পড়ছে,তাড়াতাড়ি চালাও।”
আমার দম বন্ধ হবার জোগাড়।
অবশেষে হেল্থসেন্টার এলাম।
ডাক্তার বাবু দেখলেন। বাচ্চার পিঠ চাপড়ে দিলেন। কম্পাউনডার কাঁচের গ্লাসে জল নিয়ে এলো। ছেলের মুখে একটু জল ঢালতেই সে একটা হাঁচি দিল। খাবারের একটা টুকরো নাক দিয়ে বেরিয়ে গেল। সব আবার আস্তে আস্তে স্বাভাবিক।
ডাক্তার বাবু বললেন, “ভগবান রক্ষা করেছেন, না হলে এই খাবার বার করতে এখন ই আপনাকে রাউরকেল্লা IGH হাসপাতালে যেতে হতো। সেই ব্যবস্থা এখানে নেই।”
সত্যি ভগবান রক্ষা করেছিলেন সেই দিন সেই মুহূর্তে আমাদের ছোট ছেলে শ্রীমান অদ্রি কে।
আমার বাবার আদরের “সিংঘ মশাইকে”।
আজ পনেরই আগষ্ট ওর জন্মদিন।
এখন বড় হচ্ছে। ওর দাদাকে গুরু মানে। অঙ্ক থেকে কম্পিউটার, গেম খেলা সব কিছু তে দাদা ই ভরসা। লকডাউনে বাইরে খাওয়া হবে না তাই ইউটিউব থেকে নিত্যনতুন খাবারের সন্ধান চলছে আর মা এর উপর চাপ সৃষ্টি হচ্ছে।
এভাবেই জীবন চলমান। আমি দর্শক মাত্র।
মা বাবা দের জীবন গুলো টেনশন সামলাতে সামলাতে এমন করেই কেটে যায়… আমরাও বুঝি নি, আমাদের সন্তানরা’ও বুঝবে না হয়তো।

1 thought on “দমবন্ধ করা মূহুর্ত | Breathtaking”

  1. ভয়াবহ অভিজ্ঞতা। যাক শ্রীমান অদ্রি কে জন্মদিনের অনেক অনেক শুভেচ্ছা 🙂

Comments are closed.