Marriage anniversary

বিবাহ বার্ষিকী | Marriage Anniversary

বিবাহ বার্ষিকী
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়

আজ ১০ ই জুলাই।
আমার মানা ও বাবা’র বিবাহ বার্ষিকী।
আমার বিবাহের পর থেকে মূলত আমার
সহধর্মিনীর আগ্রহ উৎসাহে এই দিন টা আমরা একটু অন্যরকম ভাবে কাটানোর চেষ্টা করতাম।
উড়িষ্যায় থাকলে আমরা জগন্নাথ মন্দির অথবা ঘোঘড় মন্দির যেতাম। পূজা দেওয়া হতো।
ঘোঘড় মন্দির প্রাঙ্গণে অনেক টা সময় আমরা কাটাতাম।ছবি তোলা হতো।
এই মন্দির আমার ভীষন একটা ভালবাসা আর আবেগের যায়গা।
এসম্পর্কে পরে লিখব।
দুপুরের রান্নায় কিছু বৈশিষ্ট্য থাকত।
মেনু নির্বাচন বাবার ই দায়িত্ব। আজীবন।
সংসার সম্পর্কে এত অভিজ্ঞতা, রান্নার বিষয়ে বাবা’র অসাধারণ ধারনা, তার সঙ্গে আমার মা ও পেরে উঠত না।
তাই হাল ছেড়ে দিত একপ্রকার বাধ্য হয়ে ই।
বাবা র সাথ দিত সান্তনা। ব্যাস আর পায় কে।
বাবার উদ্ভাবনী চিন্তা র জুড়ি মেলা ভার।
এভাবেই ছোট ছোট আনন্দ নিয়ে বেশ ভালোই কেটেছে কানসবাহালে আমাদের দিনগুলো।পঞ্চাশ বছরের বিবাহ বার্ষিকী একটু ধুমধাম করে উদযাপন করার ইচ্ছা ছিল বাবার।
সেটার আর সুযোগ হয়নি।
ইচ্ছে টা’ই বড়, স্বপ্ন টাই আসল। স্বার্থক নাই বা হলো।
“ফুল সে হাসিতে হাসিতে ঝরে
জোছনা হাসিয়া মিলায়ে যায়”
এভাবেই জীবন থেকে জীবনে প্রবাহ বয়ে চলে
ধীরে ধীরে অবিচ্ছিন্ন ভাবে।
বাবা কে ঠাট্টার ছলে বলতাম এই ঘোর বর্ষায় আপনাদের বিয়ে করার এমন কি তাড়া পড়েছিল?
বাবা র সহাস্য উত্তর,
“নিজের ইচ্ছায় তো কিছু করিনি। সারাজীবন গুরুজন দের কথায় মান্যতা দিয়েছি।
জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ সব ই পরম পিতার নির্ধারিত।
আমাদের কিছু করার নেই।”
সত্যি ই মানুষ বড়ই অসহায়।