আমার ছাত্রদল | My Students

আমার ছাত্রদল
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়

একসময় গুটি কয়েক ছাত্র ছাত্রীদের প্রাইভেট টিউটর ছিলাম।
তাদের ই একজন, অলোক।
অলোক খেলার মাঠে আমার সাথে লাথালাথি করতো আর সন্ধ্যা য় যখন তাকে পড়াতে যেতাম আমাকে প্রনাম করতো।
কি রে হঠাৎ এতো ভক্তি কেন?
ঐ যে মাঠে…
আরে ওটা খেলা। এর জন্য প্রনাম করতে হবে না।
তবু ও অলোক করতো।
বাড়ির শিক্ষা।
পরীক্ষা র আগে পড়াতে গিয়ে বসে থাকতাম।
কি ব্যাপার? অলোক তিনতলায় নারায়নের পূজা করছে।
খানিক বাদে ধুতি টুতি পরে বাবু নামলেন।
আমাকে প্রসাদ বিতরণ করলেন।
পরীক্ষা শেষ – আলোকের নারায়ন পূজা ও শেষ।

ওদের বাড়ির সামনে বেশ সুন্দর বাগান ছিল
ওর কাকা অনেক সুন্দর সুন্দর ফুলের গাছ লাগিয়ে ছিলেন।
একদিন একটা ফুল খুব সুন্দর লাগলো। হলুদ রং। নাম টা আজ আর মনে নেই।
পরদিন অলোক সেই গাছ টা ওদের বাগান থেকে তুলে আমার বাড়িতে বসিয়ে দিয়ে গেল।
আমার কোন আপত্তি সে শুনালোই না।
এমন ভাবেই কোন এক সময় সে আমাকে একটা গন্ধরাজ ফুলের গাছ এনে দিয়েছিল।

এই সব ঘটনা অনন্ত তিরিশ বছর আগের কথা।

তার পর আমি দীর্ঘদিন উড়িষ্যায় ছিলাম।
যত্ন তো নয় বরং অযত্ন অনেক হয়েছে এইসব গাছপালায় । নষ্ট হয়ে গেছে ফুলের গাছ।
তবু ও আলোকের এই গন্ধরাজ গাছ
আজ ও রয়েছে স্ব মহিমায়।
সাথের গন্ধরাজ ফুলের ছবি টা আজকের সন্ধ্যায় তোলা। আলোকের দেওয়া সেই গাছের ফুল।
এই গরমের শুরু তে একদফায় একরাশ ভালবাসা, গন্ধরাজ হয়ে সন্ধ্যায় ফুটে ওঠে।
প্রমান দেয়, প্রকৃত ভালোবাসা আন্তরিকতা কখনো শেষ হয় না…অফুরন্ত, অফুরান।

সবার নসীবে না ও জুটতে পারে…কিন্তু আছে
থাকবে বাতাসের মতো ঘিরে…
তোমাকে, আমাকে।

পুনশ্চ:
এরপর একদিন আমার আরও এক ছাত্রের গল্প শোনাবো সময় করে।