লুঠ কা মাল
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
খুব ছোটবেলায় বাবা মায়ের কাছে আব্দার আর বায়না করতাম।
কাঙ্খিত জিনিস টি না পেলেই কান্নাকাটি, হুলস্থুল।
এজন্য আমার জেঠিমা আমাকে ধানিলঙ্কা বলতেন।
আরও একটু বড় হয়ে বুঝতে শিখলাম বাবার উপার্জনেই দিনযাপন আমাদের। তাই বায়না করার অভ্যাস টা হারিয়ে যেতে শুরু করল।
বাড়িতে পাঁঠার মাংস রান্না হলে মা’য়ের সেদিন খুব অম্বল হতো।
পরে বুঝলাম আমাদের দু টুকরো বেশি দিয়ে ঝোল আলুতেই তাঁর তৃপ্তি।
আস্তে আস্তে আমরাও ঝোলা আর আলুর ভক্ত হলাম।
ক্রমশ মায়ের থালায় মাংস নিশ্চিত করে তবেই খাওয়ার প্রথা শুরু হলো।
সবাই মিলে সামান্য কিছু ভাগ করে খাওয়াও ভীষন আনন্দের বুঝলাম।
বন্ধু দের মধ্যে ও কাড়াকাড়ি করে ভাগাভাগি করে খাওয়ার মজাই আলাদা।
যদিও বাড়িতে ই এ শিক্ষার শুরু।
এখন আমরা সবাই জানি আয় বুঝে ব্যয় করতে হয়। নিজের সন্তান দের ও এটাই বলি যে অপচয় কোরো না।
তবু ও রাস্তায় জল জমলে আমরা রেগে যাই।
ভাঙা রাস্তা য় বিপদ হলে গালাগালি দিই।
কিন্তু কিছুতেই জানতে চাই না এই সব অসুবিধা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমাদের কি করনীয়?
সবাই সরকারের কাছে আশা করি।
আর সরকার কি আশা করে? সেটা কেউ জানতে চায় না।
কোন সরকারী সুবিধা, প্রকল্প চালু হচ্ছে শুনলে সমস্ত অর্থনৈতিক অবস্থার মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়ে
“যা আসে ফোকটে” এই ভেবে। সরকারের ও গাফিলতি থাকে মানুষ কে সঠিক ভাবে বোঝানোর।
সব অনুদানের সুবিধা সবাই ঝাপিয়ে পড়ে নিতে গেলে শেষপর্যন্ত ব্যাপারটাই ভন্ডুল হয়ে যায়।
চালু সুযোগ-সুবিধা গুলো কমতে থাকে নতুনের আবির্ভাবে।
সরকারী অর্থ অপচয় হয়, যা কিনা ঘুরপথে আমাদের ই পকেটের টাকা র অপচয়।
বাড়িতে বুঝি, বন্ধু মহলে বুঝি কিন্তু সরকারের বিষয়টি এলেই আবার সেই শৈশবের বায়নায় ফিরে আসি!!
কেন এমন হয়?
পরিবার কে ভালবাসি, বন্ধু দের ভালবাসি আর দেশের বেলায় “লুঠ কা মাল ছুট্ মে!!”
এই ছেলেমানুষী ঘুচবে কবে?