শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
ছোটবেলায় জীবন টা ছিল সাইকেলের মতো।
গলি গালা, বন জঙ্গল ইঁটের রাস্তা, মাটির রাস্তা,জল কাদা সব কিছু র উপর দিয়ে হুড়মুড়িয়ে চলে যেত ভাবনা চিন্তা বিপদ আপদ ছাড়াই।
এরপরের জীবন টা হল মোটরসাইকেলের মতো।
আমি আর তুমি।
ভটভট আওয়াজ করে চলেছে হৈ হৈ করে।
আশপাশ ও আড়চোখে জ্বলছে।
বুঝে শুনে না চললেই সেই দু চাকার জীবন ঠিক বুঝিয়ে দেবে চোট লাগিয়ে, দুর্ঘটনায় মাধ্যমে।
তারপর অবধারিত ভাবেই এলো চারচাকার জীবন!
সপরিবারে সাবধানে বুঝে শুনে চলা।
চারচাকার গাড়ি আবার সব গলি তে চলে না।
তাই সব সময় বুঝে শুনে চলতে এবং চালাতে হয়।
নচেৎ বড়সড় বিপর্যয়ের সম্ভবনা।
জীবন হানি ও অসম্ভব নয়।
এভাবে চলতে চলতে একসময়
চারচাকার জীবন টা কখন যে ট্রেনের জীবন হয়ে গেল বোঝাই গেল না!!
এখন সেখানে অনেক গুলো কামরা।
অনেক নতুন নতুন এবং সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন সমস্যার একদম আলাদা জীবন সেই সব কামরার খোপে খোপে ঠাসা।
তাদের সবাইকে সঙ্গে নিয়েই চলতে হবে।
প্রতিদিন নিত্যনতুন কামরা নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে জুড়ে যাচ্ছে সেই ট্রেনের সাথে।
ইন্জিন টানতে পারুক না পারুক বগি ঠিক
জুড়বেই!!
ট্রেন চলেছে নিজের ট্র্যাকে, নিজের গতিতে।
এখন আর সাইকেলের মতো গলি গালা, বন জঙ্গল মাঠঘাটের উপর দিয়ে হুড়মুড়িয়ে চলা যায় না!
এই বাঁধাধরা লোহার ট্র্যাক থেকে বেরোনোর অভ্যাস ও সাহস দুটোই হারিয়ে গেছে।
মনে হয়, এই বেশ ভালো আছি।
ভালো থাকতেই হবে।
এটাও যেন আমার দায়।
কি বিচিত্র এই মানবজমিন!
সত্যি ই কি ভগবানের শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ?
আমরা এই মানুষের দল… সব কিছু দেখবো, জানবো, বুঝবো অথচ করতে কিছুই পারবে না।
তবু ও এই জানার অদম্য পিপাসা নিয়ে আমৃত্যু দৌড়ে চলাই বোধহয় মানবসভ্যতার একমাত্র ভবিতব্য!!
চরৈবেতি চরৈবেতি..