নিউনর্মালের পাতালযাত্রা
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
আমি কলকাতা মেট্রো রেলের নিয়মিত যাত্রী নই।
কোভিড পরবর্তী আনলক পর্বে একদিন বিশেষ দরকারে রবীন্দ্রসরোবর স্টেশন থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রো রেলে চড়লাম ও অদ্ভুত অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম।
প্রথমত এনড্রয়েড ফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশান ছাড়া কেউ মেট্রো স্টেশনের ভিতরে ঢুকতেই পারবেন না।
আমার এনড্রয়েড ফোন এবং ইন্টারনেট ছিল, তাই “পথদীশা” এ্যপ ডাউনলোড করে, যাত্রার সময় ইত্যাদি জানানোর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে কর্মরত পুলিশ কে তা দেখিয়ে সমতল থেকে পাতালে প্রবেশ করলাম।
হয়তো বিদেশের অনুকরণে ই কিছু একটা করার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে এই পদ্ধতিতে কিন্তু আমার মতো সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়
অনলাইনে এই ভাবে আগে থেকে ট্রেনের স্লট বুকিংয়ের মাধ্যমে স্টেশনে ভীড় কমানোর এই অদ্ভুতুড়ে পদ্ধতির বাস্তবিক উপযোগিতা ঠিক কতটুকু! এভাবে কি ভীড় নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না মোবাইল কোম্পানি গুলো কে ব্যবসা বিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে? কে জানে!
এরপর টিকিট কাউন্টারে গিয়ে আরো একদফা বিস্ময়!
নূন্যতম ১০০ টাকার স্মার্ট কার্ড কিনতেই হবে, তার মধ্যে ৬০ টাকা রেলওয়ের কাছে জমা থাকবে। যখন ওই কার্ড টা ফেরত দেবেন ওই ৬০ টাকা টাও ফেরত পাবেন।
কিন্তু সমস্যা এই যে, ফেরৎ দেওয়ার মূহূর্তে ঐ কার্ডে নূন্যতম ব্যালেন্স যা থাকবে সেই টাকা আর ফেরত পাবেন না। সেই টাকা রেলের খাতায় চলে গেল।
এরপর তাড়াহুড়ো করে ট্রেনে চড়ে দমদম যাবার পর সেইখানে মেশিনে দেখলাম আমার কার্ডের ব্যালান্স রইলো ২৪ টাকা।
ফেরার পথে এই ২৪ টাকা ব্যালেন্স থাকা সত্ত্বেও দমদম থেকে রবীন্দ্রসরোবরে ফিরতে পারলাম না।
যদিও এই পথের ভাড়া ১৬ টাকা।
কাউন্টার থেকে জানানো হলো, আমার স্মার্ট কার্ডটির নূন্যতম ব্যালেন্স ২৫ টাকা হতেই হবে এবং তার জন্য আমাকে পুনরায় নূন্যতম ১০০ টাকার রিচার্জ করতে হবে।
অগত্যা আরও ১০০ টাকা দিয়ে রিচার্জ করলাম।
টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ র পরিবর্তে এই জটিলতা সৃষ্টি করে নিত্যযাত্রীদের কতটুকু সুবিধা হবে তা বুঝলাম না, কিন্তু আমার মতো সাধারণ যাত্রী যারা কালেভদ্রে এই পরিসেবা নেবেন তাদের প্রত্যেককে ৩২ টাকার মেট্রো চড়তে ২০০ টাকার গুনাগার দিতেই হবে এই করোনা কালে, যখন অধিকাংশ মানুষেরই আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ।
এমন অমানবিক আচরণ সরকারের কাছে কাম্য নয়।
কাহিনী কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
ফেরার পথে আমি রবীন্দ্রসরোবর স্টেশনে পিছনের দিকে নামলাম কারণ ঐ পথে বেরিয়ে উপরে উঠে টালিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন টা সামনেই পড়ে। আমার বজবজ লোকাল ধরবার তাড়া’ও ছিল।
কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষী আমাকে আটকালো। বললেন এদিকে প্রবেশ আর উল্টো দিকে প্রস্থান!
নিরুপায় হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভবানী সিনেমা র সামনে উঠলাম এবং আবার ও সেই রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকের ফুটপাত ধরে টালিগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশন এলাম। ততক্ষণে আমার ট্রেন চলেগেছে।
পরবর্তী ট্রেন দু ঘন্টা পর, কারণ এখনও লোকাল ট্রেনের পরিসেবা পুরোপুরি চালু হয়নি।
পরিশেষে বলি, এমন উন্নততর সামাজিক দূরত্ব বিধি চালু করে লকডাউন পর্বের লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কলকাতা মেট্রো রেলের আধিকারিক দের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আনলক পর্বে কলকাতা মেট্রো রেলের পরিসেবা “কেবলমাত্র অল্পবয়সী বিত্তশালীদের নিত্যযাত্রা ও প্রমোদভ্রমনের জন্য ই নির্দিষ্ট”। এমন একটি নোটিশ ঝোলালে হয়তো কিছু উপকার হবে।
আমার মতো অর্বাচীনের দল আর ভুলেও ও পথ মাড়াবেন না, যতই তাদের দরকার পড়ুক না কেন।
কোভিড পরবর্তী আনলক পর্বে একদিন বিশেষ দরকারে রবীন্দ্রসরোবর স্টেশন থেকে দমদম পর্যন্ত মেট্রো রেলে চড়লাম ও অদ্ভুত অভিজ্ঞতা অর্জন করলাম।
প্রথমত এনড্রয়েড ফোন এবং ইন্টারনেট কানেকশান ছাড়া কেউ মেট্রো স্টেশনের ভিতরে ঢুকতেই পারবেন না।
আমার এনড্রয়েড ফোন এবং ইন্টারনেট ছিল, তাই “পথদীশা” এ্যপ ডাউনলোড করে, যাত্রার সময় ইত্যাদি জানানোর পর কিউআর কোড স্ক্যান করে কর্মরত পুলিশ কে তা দেখিয়ে সমতল থেকে পাতালে প্রবেশ করলাম।
হয়তো বিদেশের অনুকরণে ই কিছু একটা করার দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা রয়েছে এই পদ্ধতিতে কিন্তু আমার মতো সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়
অনলাইনে এই ভাবে আগে থেকে ট্রেনের স্লট বুকিংয়ের মাধ্যমে স্টেশনে ভীড় কমানোর এই অদ্ভুতুড়ে পদ্ধতির বাস্তবিক উপযোগিতা ঠিক কতটুকু! এভাবে কি ভীড় নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না মোবাইল কোম্পানি গুলো কে ব্যবসা বিস্তারের সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে? কে জানে!
এরপর টিকিট কাউন্টারে গিয়ে আরো একদফা বিস্ময়!
নূন্যতম ১০০ টাকার স্মার্ট কার্ড কিনতেই হবে, তার মধ্যে ৬০ টাকা রেলওয়ের কাছে জমা থাকবে। যখন ওই কার্ড টা ফেরত দেবেন ওই ৬০ টাকা টাও ফেরত পাবেন।
কিন্তু সমস্যা এই যে, ফেরৎ দেওয়ার মূহূর্তে ঐ কার্ডে নূন্যতম ব্যালেন্স যা থাকবে সেই টাকা আর ফেরত পাবেন না। সেই টাকা রেলের খাতায় চলে গেল।
এরপর তাড়াহুড়ো করে ট্রেনে চড়ে দমদম যাবার পর সেইখানে মেশিনে দেখলাম আমার কার্ডের ব্যালান্স রইলো ২৪ টাকা।
ফেরার পথে এই ২৪ টাকা ব্যালেন্স থাকা সত্ত্বেও দমদম থেকে রবীন্দ্রসরোবরে ফিরতে পারলাম না।
যদিও এই পথের ভাড়া ১৬ টাকা।
কাউন্টার থেকে জানানো হলো, আমার স্মার্ট কার্ডটির নূন্যতম ব্যালেন্স ২৫ টাকা হতেই হবে এবং তার জন্য আমাকে পুনরায় নূন্যতম ১০০ টাকার রিচার্জ করতে হবে।
অগত্যা আরও ১০০ টাকা দিয়ে রিচার্জ করলাম।
টাকা দিয়ে টোকেন সংগ্রহ র পরিবর্তে এই জটিলতা সৃষ্টি করে নিত্যযাত্রীদের কতটুকু সুবিধা হবে তা বুঝলাম না, কিন্তু আমার মতো সাধারণ যাত্রী যারা কালেভদ্রে এই পরিসেবা নেবেন তাদের প্রত্যেককে ৩২ টাকার মেট্রো চড়তে ২০০ টাকার গুনাগার দিতেই হবে এই করোনা কালে, যখন অধিকাংশ মানুষেরই আর্থিক অবস্থা খুবই খারাপ।
এমন অমানবিক আচরণ সরকারের কাছে কাম্য নয়।
কাহিনী কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
ফেরার পথে আমি রবীন্দ্রসরোবর স্টেশনে পিছনের দিকে নামলাম কারণ ঐ পথে বেরিয়ে উপরে উঠে টালিগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন টা সামনেই পড়ে। আমার বজবজ লোকাল ধরবার তাড়া’ও ছিল।
কিন্তু নিরাপত্তা রক্ষী আমাকে আটকালো। বললেন এদিকে প্রবেশ আর উল্টো দিকে প্রস্থান!
নিরুপায় হয়ে হাঁটতে হাঁটতে ভবানী সিনেমা র সামনে উঠলাম এবং আবার ও সেই রাস্তা পার হয়ে উল্টো দিকের ফুটপাত ধরে টালিগঞ্জের রেলওয়ে স্টেশন এলাম। ততক্ষণে আমার ট্রেন চলেগেছে।
পরবর্তী ট্রেন দু ঘন্টা পর, কারণ এখনও লোকাল ট্রেনের পরিসেবা পুরোপুরি চালু হয়নি।
পরিশেষে বলি, এমন উন্নততর সামাজিক দূরত্ব বিধি চালু করে লকডাউন পর্বের লোকসান পুষিয়ে নেওয়ার জন্য কলকাতা মেট্রো রেলের আধিকারিক দের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
আনলক পর্বে কলকাতা মেট্রো রেলের পরিসেবা “কেবলমাত্র অল্পবয়সী বিত্তশালীদের নিত্যযাত্রা ও প্রমোদভ্রমনের জন্য ই নির্দিষ্ট”। এমন একটি নোটিশ ঝোলালে হয়তো কিছু উপকার হবে।
আমার মতো অর্বাচীনের দল আর ভুলেও ও পথ মাড়াবেন না, যতই তাদের দরকার পড়ুক না কেন।