মা
শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
একান্নবর্তী থেকে ধীরে ধীরে একটা সময় আমরা একা হতে শুরু করলাম।
আমার মায়ের ইচ্ছে ছিল,সখ ছিল ছাদে ওঠার সিঁড়ির।
বিভিন্ন কারণে মায়ের আর সেই স্বপ্নের সিঁড়ি দিয়ে ছাদে ওঠা হয়ে ওঠেনি।
বিনা সিঁড়িতেই তিনি একদিন অনেক অনেক উপরে উঠে গেলেন!
দেখতে দেখতে সাতটি বছর পার ও হয়ে গেল।
এখন চলে যাওয়ার দিন টা ও মাঝে মাঝে ভুলে যাই।
সহধর্মিনী মনে করিয়ে দেয়।
মায়ের কথা মানেই তার হাতের রান্না, শাসন, অসুখ বিসুখে আগলে রাখা।
জীবনের অন্তিম মুহূর্তের কিছু প্রলাপ, আমার অনেক গুলো ভুল সিদ্ধান্ত, আলস্য আর বেশ খানিকটা অনভিজ্ঞতা।
তা না হলে স্বাস ওঠার মুহূর্তেও আমি ভাবছি এই তো নিঃশ্বাস পড়ছে!
“এমন একান্ত করে পাওয়া,সেও সত্য যত
এমন একান্ত ছেড়ে যাওয়া সেও সেই মতো”
সুখে দুঃখে সব বিষয়েই সেই রবী বাবুর স্মরনাপন্ন হতেই হয়। অদ্ভুত প্রাসঙ্গিক এক স্রষ্টা!
জীবনের শেষ টা যেন এমন রবিময় হয়।
সব ভুললেও যেন রবীন্দ্রনাথের কবিতার ক’টা লাইন মনে রাখতে পারি। বলতে পারি মনে মনে।
ঠিক যেমন চলে যাওয়ার আগের মুহূর্তেও আমার মায়ের মুখে শুধু মাত্র একটাই শব্দ ছিল- “দাদা” অর্থাৎ
আমার বড় মামা!
কি ভীষন ভালোবাসা। আন্তরিকতা।
সব ভুলিয়ে দিয়েও “দাদা” কে ভোলাতে পারে না!
হয়তো সবার ই অন্তরের অন্তঃস্থলে থাকে এমন ই কিছু শব্দ…
ভোলা যায় না…
হয়তো বলাও যায়না অনেক সময়।
শব্দ মুক্ত হয়ে শুক্তি তেই রয়ে যায়!