শুভজিৎ বন্দোপাধ্যায়
রাধে রাধে।
বৃন্দাবনে, নিধিবন থেকে জমুনা নদী কে ডান হাতে রেখে বাঁকিবিহারী মন্দিরের দিকে আসছি।
ভীড়ের মাঝে টোটো চলছে ধীরে।
রাস্তা জুড়ে ভক্তের প্রবাহ। টোটো চালক বললেন, এখানে সারা বছর ই ভীড়।
দেশ-বিদেশের মানুষের সমাগম।
এখনও মানুষের মনজুড়ে সেই রাধা কৃষ্ণের প্রেম!
কি অদ্ভুত অথচ কি সুন্দর!
কত দেবদাস-পারু, অমিত-লাবন্য এই প্রেরনা বুকে নিয়ে একদুজে কে লিয়ে থেকে সিলসিলার পথ বেয়ে কায়ামত সে কায়ামৎ তক পর্যন্ত চলে গেছে যুগযুগ ধরে তার হিসাব নেই।
হঠাৎ রাস্তার পাশে এক মহিলা এসে আমার গালে, কপালে হলুদ রঙের রাধে রাধে ছাপ মেরে দিল।
অবাক হলাম।
সাথে সাথে আমার পরিবারের সকলেই গাল টা বাড়িয়ে দিল দশ-বিশ টাকার বিনিময়ে।
আর তার ঠিক একটু পরেই একটা ছোট্ট বাঁদর টুক করে আমার সহধর্মিণীর চোখ থেকে চশমা টা খুলে নিয়ে চলে গেল একটুও আঁচড় কামড় না দিয়ে।
কি অসাধারণ হাতের কাজ!!
মানুষের আর বাঁদরের।
সব ই প্রভুর লীলা, বৃন্দাবনের মহিমা।
পায়ে পায়ে কুন্জ গলির ভীড়ের মধ্যে দিয়ে চলতে চলতে কি দারুন এক অনুভুতি।
কখনো মনে হচ্ছে বেনারসে আছি, কখনো কলকাতার পূজোর ভীড়ে…
আবার কখনো মন ফিরে আসে এই লীলাখেত্রে।
এই সেই পথ ঘাট…শ্রী রাধা কৃষ্ণের প্রেম..
ভালবাসায় ভরা শৈশব আর যৌবনের কত স্মৃতিমেদুর স্থান!!
ভাবলেই শিহরণ…
যুগে যুগে মানুষের দল ছুটছে সেই প্রেমের সন্ধানে বিশ্বাস আর আবেগের বশবর্তী হয়ে।
আমাদের প্রতিদিনের চলাচলের পথে এমন কত গলি, পথ, স্টেশনে কিম্বা কফিশপে ভালোবাসা জন্মাচ্ছে অবিরত।
কখনো তা সেলফি বন্দী হচ্ছে।
কখনো কারো হৃদয়ে।
কিন্তু কোন ভালবাসা কোন হৃদয়ে গোপনেই থেকে যায় চিরকাল একটুকরো মুহুর্ত হয়ে, সে ইতিহাস অজানা হয়েই রয়ে যায় অজান্তে।
তাই তো ভালবাসা, প্রেম, বিবাহ এ সবই আলাদা আলাদা শব্দ এবং অর্থ বহন করে প্রতিটি জীবন থেকে জীবনে।
রাধে রাধে…